স্বর্ণ চুরির অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় মুরাদ হোসেন রনি (৩৫) নামে এক যুবককে নির্যাতন করেছেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন সরকার। নির্যাতনের ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে।
সোমবার মুন্সীগঞ্জ শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু রনি যে চুরি করেছে, তা প্রমাণ করতে পারননি কাউন্সিলর। তিনি হাত-পা বেঁধে দেদারছে লাঠি দিয়ে যুবককে পেটাচ্ছেন- এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
নির্যাতনকারী আওলাদ হোসেন মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল। নির্যাতনের শিকার মুরাদ হোসেন রনি দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার মোরশেদ হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় মোরশেদ হোসেন বাদী হয়ে আওলাদসহ আরও দুজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অপর আসামিরা হলেন-দক্ষিণ ইসলাম এলাকার মনির হোসেন ও কালাই হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় মনির হোসেনের বাড়ি থেকে চার ভরি স্বর্ণ ও ২২ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় সোমবার সকালে চুরির অপবাদে মনিরের প্রতিবেশী রনিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনসহ মনির হোসেন ও তার ভাই কালাই। পরে মনিরের বাড়ির উঠানে নিয়ে রনিকে হাত-পা বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন আওলাদ। তবে মারধরের পরও চুরির বিষয় অস্বীকার করেন রনি। পরে রনির ছোট ভাই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসলে পুলিশের কাছে কাছে রনিকে সোপর্দ করেন মারধরকারীরা।
নির্যাতনের শিকার রনি বলেন, ‘সকালে বাসায় আইসা কাউন্সিলর আওলাদ জিজ্ঞাসার কথা বলে আমাকে মনিরদের বাড়িতে নিয়া যায়। সেখানে নিয়া আমারে হাত-পায়ে বান দিয়া মারে আর বলে চুরির কথা স্বীকার করতে। আমিতো স্বর্ণ নেই নাই, আমি কেন স্বীকার করুম? আমারে শুধু শুধু মারধর করছে, আমি এর বিচার চাই।’
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কাউন্সিলর আওলাদ। তিনি বলেন, ‘আমি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসিনি। মনিরদের বাড়িতে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, এটি জানতে পেরে আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখি অনেক মানুষ সেখানে। পরে ক্রেডিট নেয়ার জন্য তাকে মেরে ছেড়ে দিছি।’
কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘পুলিশ আসলে চিকিৎসা করানোর কথা বলি। বিষয়টি আমার ভুল হয়েছে। মারধরের অধিকার আমার নেই, আমি অনুতপ্ত।’
মুরাদ হোসেন রনি যে চুরি করেছে, তার কোনো প্রমাণ আপনার কাছে আছে কি- এমন প্রশ্নে কাউন্সিল বলেন, ‘না, চুরির প্রমাণ পাইনি।’
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু বকর ছিদ্দিক জানান, মারধরের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। কালাই ও মনির নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।